মহাজনের নাও- রেজা ঘটক

নৃত্যশৈলীর মনোরম প্রযোজনা ‘মহাজনের নাও’

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি’র জাতীয় নাট্যশালায় গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেটের নৃত্য সংগঠন ‘নৃত্যশৈলী’ পরিবেশন করল ‘মহাজনের নাও’। নাট্যকার শাকুর মজিদ লিখিত ‘মহাজনের নাও’ নাটকটির নৃত্যরূপ নির্দেশনা দিয়েছেন নীলাঞ্জনা যুঁই। নৃত্যনাট্যটি বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের জীবন ভিত্তিক একটি প্রযোজনা।

শাহ আবদুল করিমের জীবদ্দশায় তাঁর উপর দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর গবেষণা করেছেন বিশিষ্ট নাট্যনির্মাতা, প্রমাণ্যচিত্র নির্মাতা, ভ্রমণ কথা সাহিত্যিক, স্থপতি, গবেষক, শিক্ষক ও আধুনিক নগর-বাউল শাকুর মজিদ। দীর্ঘ ৭ বছরে তিনি নির্মাণ করেছেন শাহ আবদুল করিমের প্রামাণ্যচিত্র ‘ভাটির পুরুষ’। আর শাহ আবদুল করিমের মৃত্যুর পর তিনি লিখেছেন গীতিনাট্য ‘মহাজনের নাও’। গীতিনাট্য ‘মহাজনের নাও’ নাটকটি মঞ্চে এনেছে সুবচন নাট্যসংসদ। আর এটি নির্দেশনা দিয়েছেন নির্দেশক সুদীপ চক্রবর্তী।

২০০৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ ৬ বছরে প্রায় ১০ বার বাউল শাহ আবদুল করিমের মুখোমুখী হন শাকুর মজিদ। এসময় হাওরের ঢেউ খেলানো জল, কালনী নদী, নৌকাবাইচ, ধলমেলা, উজানধলের ওরস, সিলেটের প্রত্যন্ত উপশহর দিরাই, বাউল শাহ আবদুল করিম ও তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে নানাভাবে মিশেছেন তিনি। বাউল শাহ আবদুল করিমের উপর যাদের আগ্রহ রয়েছে, যারা তাঁর গান নিয়ে কাজ করেছেন, গবেষণা করেছেন, নানাভাবে নানান পর্যায়ে যারা শাহ আবদুল করিমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাদের সঙ্গে নানান পর্যায়ে নানাভাবে কথা বলেছেন তিনি। এসব করতে গিয়ে নগর-বাউল শাকুর মজিদ যেসব অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, সেই সব স্মৃতিচারণই অত্যন্ত সহজ সরল ভাষায়, মনের মমতা মিশিয়ে তুলে ধরেছেন তাঁর নতুন স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ ‘ভাটির পুরুষ-কথা’য়।

আর শাহ্ আবদুল করিমের উপর রচিত শাকুর মজিদের গীতিনাট্য ‘মহাজনের নাও’কে এবার নৃত্যনাট্যে রূপ দিল সিলেটের নৃত্য সংগঠন ‘নৃত্যশৈলী’। জীবিত ও লোকান্তরিত শাহ্ আবদুল করিমকে শাকুর মজিদ নানান পরিশ্রমী অন্বেষাণে নানান ভঙ্গিতে দেখার চেষ্টা করেছেন। যা এই সময়ের বাংলাদেশে একটি বিরল দৃষ্টান্ত।

বাংলাদেশে গীতল নাট্য মঞ্চায়ন খুব বেশি হয়নি। কারণ গীতল নাট্য রচনা করা যেমন একটু কঠিন, তেমনি এর টিউন, রিদম, পারফেকশান, হিস্ট্রি ও জীবনাচার পরিস্ফূটনের কাজটি অত্যন্ত দুরূহ বটে। বাউল শাহ্ আবদুল করিমের বালকবেলা থেকে জীবনাবসান পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য অংশ নিয়েই এটি রচনা করেছেন নাট্যকার শাকুর মজিদ।

সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চলে জন্মগ্রহণকারী হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান বাউল শাহ্ আবদুল করিম। মাত্র ৮ বছর বয়সে তিনি জীবনের তাগিদে রাখালের চাকরি নেন। ভোরে গরু-মোষ নিয়ে চলে যেতেন মাঠে। দিনভর গরু চরিয়ে সন্ধ্যায় মনিবের বাড়ি ফিরতেন। রাতের খাবার খেয়ে গিয়ে বসতেন নসিব উল্লাহ’র ঘরে। করিমের বাবার চাচা নসিব উল্লাহ’র ঘরে বসতো ভক্তিমূলক গানের আসর। এভাবে ধীরে ধীরে বালক বয়সেই করিমকে পেয়ে বসে গানের নেশা।

কিশোর করিমের মনে তখন নানা প্রশ্ন ও ব্যাপক জিজ্ঞাসা কাজ করতে শুরু করে। দাদার কাছ থেকে দেহতত্ত্ব ও ধর্মতত্ত্ব বিষয়ে তালিম নেন। করিমের গ্রামের ইমাম কমরউদ্দিনের কাছ থেকে তিনি শেখেন শরিয়ত ও মারফতের বিষয়াদি। এভাবে যেসব জিজ্ঞাসা তাঁর মনে ভর করে সেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে থাকেন তিনি। আর সেসব প্রশ্ন ও উত্তর আত্মস্থ করে করেই বেড়ে ওঠেন উজানধল গ্রামের উজ্জ্বল কিশোর শাহ্ আবদুল করিম।

এভাবে এক সময় নিজেই প্রবলভাবে ঝুঁকে পড়েন গানের দিকে। গানই হয়ে ওঠে তাঁর ধ্যান-জ্ঞান-নেশা। এই গান তাঁকে মানসিক শান্তি দিলেও সামাজিকভাবে কিন্তু মোটেও স্বস্তি দেয়নি। ঈদের দিন নামাজ পড়তে গেলেন বালক করিম। নামাজের জামাতে মোল্লা-মুরব্বিরা আপত্তি তুললেন করিমের ব্যাপারে। করিম নাকি ধর্মবিরোধী কাজ করে বেড়ায়! গানবাজনায় ডুবে থাকে। তাঁর কাজ বেশরা ও বেদাতি। এ ধরনের শরিয়তবিরোধী কাজ আর কখনো করবে না বলে তওবা করলেই কেবল করিম জামাতে নামাজ পড়তে পারবে, এমন সিদ্ধান্ত হয়।

শেষপর্যন্ত ফতোয়াবাজ মোল্লা এবং ধার্মিক মুরব্বিদের হুমকিতে ভীত হয়ে করিম তাঁর বেড়ে ওঠার, ভালোবাসার উজানধল গ্রাম ছেড়ে রওনা দেন ভিন গাঁয়ের পথে। সঙ্গী তাঁর একতারা আর কণ্ঠে মধুর গান। গানচর্চায় কোনো খামতি নেই। মাটির গন্ধমাখা তাঁর রচিত সেসব গান ক্রমশ উঠে আসতে থাকে মানুষের মুখে মুখে। এভাবে নাম-যশও তাঁর উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে। কিন্তু দুঃসহ দারিদ্র্যতা কালো ছায়ার মতো লেপ্টে থাকে তাঁর জীবনে। এক পর্যায়ে আবার গ্রামের মানুষ করিমকে নিজের গ্রামে বসবাস করার সুযোগ দেয়।

করিমের দুই শিষ্য সুনন্দ গোসাই ও আকবর আলী। সুনন্দ হিন্দু আর আকবর মুসলিম। সুনন্দ করিমের শিষ্যত্ব গ্রহণ করার পর থেকে করিমের বাড়িতেই থাকে, খায়, ঘুমায়। এক পর্যায়ে মারা যায় সুনন্দ। কিন্তু সুনন্দের আত্মীয়রা সনাতন ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করতে নারাজ। শেষ পর্যন্ত করিম অনন্যোপায় হয়ে সুনন্দকে তুলসীতলায় কবর দেন। সুনন্দ’র মৃত্যুর কিছুদিন পরেই মারা যায় অন্য শিষ্য আকবর। এবার আকবরের জানাজা পড়াতে যথারীতি ইমাম সাহেব নারাজ।

এভাবে নানান প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করেই করিম কেবল গান নিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দেন। আর ভুবনমোহিনী গান দিয়ে জয় করেন প্রতিকূল পরিবেশ। ফলে এক সময়ে যারা তাঁর সাথে রূঢ আচরণ করেছে, তারাও পরবর্তীকালে নমনীয় হতে বাধ্য হয়। তাই হয়তো করিমের মৃত্যুর পর নামাজে জানাজা পড়ানোর প্রাক্কালে ইমাম সাহেব দুই বার জানাজা পড়ার ঘোষণা দেন। কারণ বর্ষায় মাঠঘাট তখন ডুবে একাকার। করিম ভক্তদের সবাইকে একবারের জানাজা নামাজে ধরবে না।

বাউল শাহ আবদুল করিমের জীবনীভিত্তিক সম্পূর্ণ পয়ার ছন্দে রচিত শাকুর মজিদের ‘মহাজনের নাও’ গীতল নাট্য বাংলা সাহিত্যে এক অভিনব সংযোজন। বাউল সাধক ও শিল্পী শাহ্ আবদুল করিমের জীবন, সাধনা, দর্শন ও কর্মকে উপজীব্য করে রচিত ‘মহাজনের নাও’ নাটকটি মূলত দেহতত্ত্বনির্ভর, যাতে শিল্পীর জীবনের নানা জটিলতা, সংকট এবং তার থেকে উত্তরণের বিষয়গুলো প্রকাশ পেয়েছে। ব্রিটিশ আমলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে শিল্পীর এই জগতে আবির্ভাব। অত্যন্ত দরিদ্র অবস্থায় সংগ্রামমুখর জীবনে শিল্পী নিজেকে আবিষ্কার করার পাশাপাশি সৃষ্টিকর্তাকে খোঁজার চেষ্টা করেছেন। এই প্রচেষ্টাতেই তিনি জীবনভর সাধনা করেছেন।

নাটকে দেখা যায় বাউল করিম রাখাল বালক, গরুর পাল নিয়ে ছুটে চলে গ্রামের মেঠোপথে, দোতারা হাতে নদীর তীরে হাঁটে, রাখাল বালক হাঁটতে হাঁটতে গান বাধে। তাঁর গানে থাকে ভাটির কথা, অনাহারী কৃষকের কথা। গানে গানে মানুষের দুঃখে করিম কাঁদে। করিমের কণ্ঠে উঠে আসে হাওর প্রদেশের গান; গানে উঠে আসে ভাটির টান। ভাটি গ্রাম উজানধলের মসজিদের ইমাম বাউল করিমকে গান-বাজনা করে বলে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দিতে চান। আকবর, রুহী, বনেশসহ ভাটি অঞ্চলের বাউলের দল করিমের পিছু পিছু দলে এসে ভিড়ে যায়। সবাই মুর্শিদ মেনে করিমের শিষ্য হতে চায়। ভাটি অঞ্চল আর হাওর প্রদেশের নদীর তীরে রাখাল বালক থেকে দিনে দিনে বাউলের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে দিন যায় মাস যায় বছর যায়। পরিণত বয়সে এসে করিমের মনে ভাবনার উদয় হয় কোন এক মহাজনের কাছ থেকে পাওয়া ধার করা নৌকা, যে নৌকার মালিক তিনি নন, চালিয়ে নেয়াটাই ছিল শুধু তার দায়িত্ব। এখানেই গীতিনাট্য বা নৃত্যনাট্যটি শেষ হয়।

‘মহাজনের নাও’ গীতিনাট্যে শাকুর মজিদ কেবল বাউল শাহ্ আবদুল করিমের গান ব্যবহার করেছেন। কিন্তু করিমের গানের যে মূল সুর সেটি কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছুটা বিকৃত হয়েছে নৃত্যনাট্যে। নৃত্যশৈলী’র নৃত্যনাট্য প্রযোজনায় এটি ইচ্ছাকৃত নাকি নিজেদের অজান্তে এটা আমার পক্ষে বলা একটু মুশকিল। নির্দেশক নীলাঞ্জনা যুঁই এটি ভালো বলতে পারবেন।

নৃত্যনাট্যে বিভিন্ন দৃশ্যে নানান ভঙ্গিতে নানান মাত্রার কম্পোজিশান বেশ চোখ জুড়ানো। কিন্তু নৃত্যশিল্পীদের কিছু কিছু দৃশ্যে একই ধরনের ভঙ্গির পুনঃপুনঃ ব্যবহার কিছুটা একঘেয়েমি উদ্রেক করে। এছাড়া কথকের টানা গল্প বলার ঢঙটিও হয়তো এই একঘেয়েমি উদ্রেক করার পেছনে দায়ী। কথককে ব্যাকগ্রাউন্ডে অডিও মাধ্যমে না রেখে বাস্তবে মঞ্চে দেখানো গেলে হয়তো ‘মহাজনের নাও’ নৃত্যনাট্যটি আরো বেশি উপভোগ্য হতে পারতো।

আমার কাছে এই নাটকের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা মনে হয়েছে সেট ও অঙ্গসজ্জ্বায়। নাটকের আখ্যান ও গীতিনাট্যের যে চমৎকারিত্ব, যে মুন্সিয়ানা, তা যেন কস্টিউম ও সেটের দুর্বলতায় কিছুটা ম্লান হয়েছে বলেই আমার ধারণা। কস্টিউমের রঙ ও ডিজাইন নির্বাচনে নির্দেশক আরো যত্নবান হলে এবং নাটকের আখ্যানকে মাথায় রেখে চাহিদা মাফিক সেট নির্মাণ করলে, এই প্রযোজনাটি আরো সুন্দর হতে বাধ্য।

সিলেটের নৃত্য সংগঠন নৃত্যশৈলীর কোনো প্রযোজনা হিসেবে ‘মহাজনের নাও’ আমি প্রথম দেখলাম। ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠা নেওয়া নৃত্যশৈলী সংগঠনটি ২০০৬ সাল থেকে পেশাদারি প্রযোজনা করছে। মঞ্চে নিয়মিত পরিবেশনা ছাড়াও নৃত্যশৈলী প্রায় ১৫টি প্রযোজনা করেছে। নির্দেশক নীলাঞ্জনা যুঁই সংগঠনটির প্রধান প্রযোজক ও নির্দেশক। তাই অভিজ্ঞতা ও উৎকর্ষের দিক বিবেচনায় নৃত্যশৈলী’র কাছে ‘মহাজনের নাও’ নৃত্যনাট্যটি আরো মনোমুগ্ধকর পরিবেশনাই আমার কাম্য ছিল। আমার সেই প্রত্যাশা কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এ বছর ১৪ থেকে ২২ নভেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত আয়োজন করছে দ্বিতীয় জাতীয় নৃত্যনাট্য উৎসব ২০১৬। আর উৎসবের চতুর্থ দিনে জাতীয় নাট্যশালায় পরিবেশিত হলো নৃত্যশৈলী’র নৃত্যনাট্য প্রযোজনা ‘মহাজনের নাও’। শিল্পকলা একাডেমি দ্বিতীয় জাতীয় নৃত্যনাট্য উৎসব পালন করলেও হলে দর্শক আনার জন্য শিল্পকলার কোনো আগ্রহ আমার চোখে পড়েনি। দর্শক শূন্য নাটক দেখে আসলে নাটকের আসল টেন্টামেন্ট-ই ধরা যায় না।

আমাদের দেশে উৎসবের কোনো কমতি নেই। টাকার শ্রাদ্ধেরও কোনো কমতি নেই। কিন্তু যাদের জন্য এই আয়োজন, সেই দর্শক কীভাবে নাটক দেখতে আসবে, সেখানে আয়োজকদের কোনো ক্যারিশমা দেখি না। বাংলাদেশে কতিপয় নাটকের দলের দর্শকরাই কেবল এ ওর নাটক দেখে সময় করে। নাটকের বাইরের সাধারণ দর্শককে কীভাবে হলমুখী করা যায়, সেই ভাবনার জায়গাটি বিগত ৪৫ বছরেও গুরুত্ব পায়নি। অথচ নাসিরনগরে সনাতনদের বাড়িঘর পোড়ানোর লাইন খুব লম্বা হয়। গাইবান্ধায় সাঁওতালদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়ে তাদের উচ্ছেদ করায় প্রচুর লোক সমাগম হয়। কেবল সিনেমা, নাটক, আর্ট-কালচারের উৎসবগুলো সারা বছর জনশূন্য।

তার মানে আমাদের শিল্পচর্চার কোথাও এখনো একটা বড় ধরনের ফাঁক আছে। সাধারণ পাবলিককে শিল্পের প্রতি আকর্ষন করানোর কাজে আমাদের আয়োজকদের নানান কিসিমের বাহানার আড়ালে বড় ধরনের ব্যর্থতা আছে। আমাদের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি কেবল গুটি কতক ব্যক্তি ও সংগঠনের এক দুর্বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে কিনা তা এখন ভেবে দেখার সময়। নইলে খুব সুন্দর সুন্দর নাটকেও কেন দর্শক আসবে না? এমনিতে যে দেশে রাস্তায় দুইটা রিক্সায় ধাক্কা লাগলে যেখানে কয়েকশ লোক জড়ো হয় তামাশা দেখার জন্য, সেখানে আর্ট-কালচারের নামে আমাদের শিল্পকলা একাডেমি বা বাংলা একাডেমিতে যে চর্চা হচ্ছে, সেখানে কেন সেই একই আবালবৃদ্ধবনিতাদের ভিড় নেই? নাকি সাধারণ পাবলিককে এই তামাশার বাইরে রাখতে পারলেই আর্ট-কালচার থেকে চুরি-চামারি করতে কোনো কোনো পক্ষের খুব সুবিধা হয়?

সবশেষে সিলেটের নৃত্য সংগঠন নৃত্যশৈলীকে ধন্যবাদ ‘মহাজনের নাও’ পরিবেশনার জন্য। নির্দেশক নীলাঞ্জনা যুঁইকে অভিনন্দন। অভিনন্দন ‘মহাজনের নাও’ গীতিনাট্যের রচয়িতা শাকুর মজিদ মহাজনকেও। শাকুর ভাই আমাকে না জানালে এমন সুন্দর একটি নৃত্যনাট্য আমি আসলে মিস করতাম। আগামীতে নৃত্যশৈলী আরো সমৃদ্ধ পরিবেশনা নিয়ে হাজির হবে এমন প্রত্যাশা রইল।

রেজা ঘটক: কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা

নভেম্বর ১৮, ২০১৬

মন্তব্য
Loading...