শাকুর মজিদ: নগর বাউল-রাশি রাশি ঈর্ষা – মাহমুদ হাফিজ

জন্মদিন স্মারক

 

ছবি-শাকুর মজিদ এর অফিসে এক আড্ডায়, ২০১৬ সালে

বহুমাত্রিক ও বহুলপ্রজ লেখক শাকুর মজিদের ওপর লেখার ক্ষেত্রে আমার দুটো সমস্যা।এক – নির্ভেজাল বন্ধুতার কারণে নির্মোহ হতে না পারা, দুই-ভ্রমণগদ্য ছাড়া তার বহুমাত্রিক লেখালেখি ও সৃজনশীলতার অনেকক্ষেত্র সম্পর্কে আমার অজ্ঞানতা কিংবা অনাগ্রহ। নির্মোহ না হলে কারও সৃজনশীলতার সুবিচার করা মুশকিল। এসব সত্ত্বেও শাকুরের পুরস্কার পাওয়ার পর আত্মীয়-বন্ধুদের লেখায় কলম ধরতে উৎসাহী না হয়ে পারা গেল না।

শাকুর মজিদ পঞ্চাশ পেরুনোর মধ্যেই দেশের বড়সড় একটি পুরস্কার ব্যাগে পুরেছেন-এটা বড় ঈর্ষণীয় ব্যাপার।‘ফেরাউনের গ্রাম’ নামের ভ্রমণগদ্যের জন্য পুরস্কার পেলেও আমি মনে করি এর চেয়ে ভাল ভাল ভ্রমণের বই শাকুরের আছে। ভাল লাগছে এই ভেবে যে,বছর কয়েক আগে থেকে শাকুরের কাছে ধর্ণা দিয়েছিলাম এই প্রস্তাব নিয়ে যে,- চলুন সাহিত্য পরিমন্ডলে স্লোগান তুলি-ভ্রমণকে শুধু কাহিনীর বৃত্তে আটকে না রেখে সাহিত্যের মূলধারা হিশেবে গণ্য করা হোক, ভ্রমণগদ্য হিশেবে অভিহিত করে স্বীকৃতি-পুরস্কার ইত্যাদি দেয়া হোক ইত্যাদি। শাকুরসহ ভ্রমণলেখকদের সঙ্গে আড্ডা-আলোচনা ছাড়া সে ভাবনা খুব একটা উচ্চকিত হয়নি। তবে কাকতালীয়ভাবে ভ্রমণগদ্যের স্বীকৃতি মিলতে শুরু করেছে। একের পর এক ভ্রমণগদ্য লেখকগণ বাংলা একাডেমীসহ দেশের মানসম্মত পুরস্কার লাভ করছেন। ‘ফেরাউনের গ্রাম’ নিয়ে শাকুরের পুরস্কারসাফল্য তার ধারাবাহিকতা আমার ধারণা।

শাকুরের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব একদম পারিবারিক পর্যায় পর্যন্ত। শাকুর কর্মস্থল-বাসা-গ্রামের বাড়ি সর্বত্র একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে জীবনযাপন করেন, যার সঙ্গে নিজের দুয়েকটি বৈশিষ্ট্যের দারুণ মিল। এর একটি হচ্ছে নগর বাউলিয়ানা। মানে হচ্ছে, নগরী থেকেও গ্রামীণ বাংলা ও আধ্যাত্মিকতার মধ্যে ডুব মারা। মাঝে মাঝেই লালনের আধ্যাত্মিকতায় অবগান করতে গ্রামে ছুটে যাই। ঠিক তেমন শাকুর আছেন হাছনরাজা, শাহ আবদুল করিম, উকিল মুন্সীকে নিয়ে। গবেষণা করেই ছেড়ে দেননি…….এদের আধ্যাত্মিক মাহাত্ম্যকে তিল তিল করে উপভোগ না করলে দিন তার চলে না। অতএব ইন্ড অব দ্য ডে, শাকুর মজিদ -্র আমি নগর বাউল। পুরস্কার পাওয়া উপলক্ষে এই নগরবাউলকে অভিনন্দন। সেই সঙ্গে একরাশ ঈর্ষা।

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০১৭, ১৯:০৯

পূর্ব-পশ্চিম 

 

মন্তব্য
Loading...