সক্রেটিসের বাড়ি-রবিউল হুসাইন

সক্এরেটিসের বাড়ি এথেন্সে শাকুর মজিদ

শাকুর মজিদ বহুগুণে গুনাণ্বিত একজন সৃষ্টিশীল মানুষ। তিনি একাধারে দেশের যেমন একজন বিশিষ্ট স্থপতি, পাশাপাশি টেলিভিশন নাটক ও তথ্যচিত্র নির্মাতাও। তাঁর দেখার যেমন আলাদা একটা চোখ আছে লেখার মধ্যেও এর চমৎকার প্রকাশ ঘটে। তাকে আমরা ব্যতিক্রমধর্মী এক ভ্রমণ শিল্পী হিসেবে আখ্যায়িত করতে পারি। ভ্রমণকেন্দ্রিক তথ্যচিত্র নির্মানে তিনি যে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন তা অনবদ্য। বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের আলেখ্য সেলুলয়েডের ভাষায় যেমন সাবলিল ও পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, সেগুলি দর্শকবৃন্দ টেলিভিশনের পর্দায় নিবিষ্টমনে উপভোগ করেছেন অনেকদিন ধরে, তেমনি অক্ষরের মাধ্যমে বইয়ে লিপিবদ্ধ করে এর প্রসার ঘটিয়েছেন বিশেষ বৈশিষ্ট্যে।
‘সক্রেটিসের বাড়ি’ শীর্ষক বইটির কয়েকটি অংশ যখন এক জনপ্রিয় পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছিল তখনই সেটি পাঠকের দৃষ্টি কেড়েছিল, তার মধ্যে আমি একজন। বিশেষ করে লেখকের সুক্ষ পর্যবেক্ষন ক্ষমতা, ইতিহাস ভিত্তিক শিক্ষামূলক বর্ণনা এবং ভ্রমণের মধ্যে দিয়ে সেই স্থানের স্বচ্ছ ও পরিস্কার বিবরণ এত প্রাণবন্ত হয়ে মন ও মননে ধরা পড়ে যে মনে হয় লেখকের সঙ্গে পাঠকও অদৃশ্যভাবে তার সঙ্গে ছায়া হয়ে সর্বক্ষণ সঙ্গ দিচ্ছেন। এখানেই একজন ভ্রমণ শিল্পীর সার্থকতা। ছোট বেলায় সেই রমাকান্ত বিশ্বাসের ভ্রমণকাহিনী পড়ে যেমন রোমাঞ্চিত হয়েছিলাম শাকুর মজিদের লেখায় সেই স্বাদ পেয়েছি। ‘সক্রেটিসের বাড়ি’ বইটিতে ইউরোপের ইতিহাস প্রসিদ্ধ তিনটি শহর- বার্লিন, এখেন্স ও প্যারিসকে নিয়ে লেখকের চার বন্ধু সহকারে একটা অনবদ্য ভ্রমণ আলেখ্য। বইটি শুধু ভ্রমণের বর্ণনা নয়, সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশ ও শহরের ইতিহাস এবং বর্তমান অবস্থার বিশদ পরিচয় খুব নিখুঁতভাতে তুলে ধরা হয়েছে। পাঠকের সঙ্গে ইতিহাস ও স্থাপত্যের ছাত্রদের জন্য বইটি অবশ্য পাঠ্য বলে মনে করি। সব মিলিয়ে একজন পাঠক হিসেবে বইটির বহুল প্রচার কমনা করি। অভিনন্দন শাকুর মজিদকে।

রবিউল হুসাইন
কবি ও স্থপতি

১১/৫/২০১৩

মন্তব্য
Loading...